জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে পযর্টন শহর কক্সবাজারে শেষ হয়েছে রাখাইনদের সামাজিক উৎসব সাংগ্রেং পোয়ে বা জলকেলী উৎসব। উৎসবের শেষ দিন মঙ্গলবার শহরের রাখাইন পল্লীগুলোতে ছিল রাখাইন তরুন-তরুনীদের প্রাণের মেলা। নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাসের মাধ্যমে রাখাইন সম্প্রদায়ের নর-নারীরা বরণ করে নিল রাখাইন নববর্ষকে। আর বিদায় জানালো পুরনো আরো একটি বছরকে। জলকেলী উৎসবের শেষ দিনে সবার মনে ছিল হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সম্প্রীতির বাঁধনে জড়িয়ে সকল মানুষরা যাতে এক হৃদয়ে থাকতে পারে। শুরু রাখাইন নয়, জলকেলী উৎসবের আনন্দে ভেসেছে হিন্দু-মুসলিম ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের নর-নারীরাও। বাঁধভাঙ্গা আনন্দের এ জোয়ারের সামিল হয়েছিল দেশী-বিদেশী অনেক পর্যটকও। সবমিলিয়ে জলকেলী উৎসবকে সার্বজনীন রুপ দিতে শহরের রাখাইন পল্লীগুলোতে বসেছিল নানা ধর্ম, পেশা ও বর্ণের মানুষের মিলন মেলা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রাখাইনদের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব সাংগ্রেং পোয়ে বা নববর্ষ উৎসবের জলকেলী উৎসবের শেষ দিনে ১৯ এপ্রিল সকাল থেকে শহরের রাখাইন পল্লীতে স্থাপিত জলকেলী প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে হাজির হতে থাকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকল বয়সের নর-নারীরা। দলবদ্ধ ভাবে নতুন পোষাক পরিহিত হয়ে সবাই হাজির হয় পানি ছিটানোর সেই আনন্দ স্থানে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী রাখাইনদের নববর্ষ উৎসব তথা জলকেলী উৎসব প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ও জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হলো। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আয়োজনের মাত্রাটা ছিল বেশী। আর এ উৎসবের মূল লক্ষ্য অতীতের সকল ব্যাথা-বেদনা, গ্লানি ভূলে গিয়ে ভ্রাতৃত্ববোধের মাধ্যমে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়া। উল্লেখ্য-কক্সবাজারের চেয়ে প্রতিবেশী মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য বা রাখাইন এস্টেটে আরো জাঁকজমকের সাথে পালিত হয় উৎসবটি। এ উপলক্ষে রাখাইন তরুনী, বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা চন্দন ও ছেনেখা (এক প্রকার সুগন্ধি গাছ) কাঠ ঘষে সুগন্ধি পানি তৈরির কাজ করে থাকে।
পাঠকের মতামত: